আমার দাদী অতি বৃদ্ধ তাই রোজা রাখতে পারেনা করনীয় কি?

Share this

আপনার দাদী অতি বৃদ্ধ হওয়ার কারণে রোজা রাখতে না পারলে ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে তার জন্য কিছু বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছে। ইসলামে প্রতিটি ইবাদতের ক্ষেত্রে মানুষের শারীরিক ও মানসিক সামর্থ্যকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

১. রোজা রাখার শর্ত

ইসলামে রোজা রাখার জন্য কিছু শর্ত রয়েছে:

  • সুস্থতা: রোজা রাখার জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকা জরুরি।
  • সামর্থ্য: রোজা রাখার জন্য শারীরিক সামর্থ্য থাকা জরুরি।
  • বয়স: রোজা রাখার জন্য প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া জরুরি।

আপনার দাদী অতি বৃদ্ধ হওয়ার কারণে রোজা রাখার শারীরিক সামর্থ্য না থাকলে, তার জন্য রোজা রাখা বাধ্যতামূলক নয়।

 

আরও পড়ুনঃ রোজা থাকা অবস্থায় ডায়বেডিস পরিক্ষা করা যাবে কিনা ?

 

২. রোজা না রাখার অনুমতি

ইসলামে কিছু বিশেষ অবস্থায় রোজা না রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে:

  • অসুস্থতা: যদি রোজা রাখার কারণে অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তবে রোজা না রাখার অনুমতি রয়েছে।
  • বৃদ্ধ বয়স: অতি বৃদ্ধ বয়সে রোজা রাখার শারীরিক সামর্থ্য না থাকলে, রোজা না রাখার অনুমতি রয়েছে।
  • গর্ভাবস্থা ও স্তন্যদান: গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারী মহিলাদের রোজা না রাখার অনুমতি রয়েছে।

আপনার দাদী অতি বৃদ্ধ হওয়ার কারণে রোজা রাখার শারীরিক সামর্থ্য না থাকলে, তার জন্য রোজা না রাখার অনুমতি রয়েছে।

৩. ফিদইয়া দেওয়া

যারা রোজা রাখার সামর্থ্য রাখেন না, তাদের জন্য ইসলামে ফিদইয়া দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। ফিদইয়া হলো প্রতিটি রোজার পরিবর্তে একজন গরিব ব্যক্তিকে খাদ্য দান করা। আপনার দাদী রোজা রাখতে না পারলে, তার পক্ষ থেকে ফিদইয়া দেওয়া যেতে পারে।

৪. ফিদইয়া দেওয়ার পদ্ধতি

ফিদইয়া দেওয়ার পদ্ধতি নিম্নরূপ:

  • খাদ্য দান: প্রতিটি রোজার পরিবর্তে একজন গরিব ব্যক্তিকে দুই বেলা খাদ্য দান করা।
  • নগদ অর্থ: প্রতিটি রোজার পরিবর্তে একজন গরিব ব্যক্তিকে নগদ অর্থ দান করা।

ফিদইয়া দেওয়ার জন্য স্থানীয় মসজিদ বা ইসলামী সংস্থার সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে।

৫. ফিদইয়ার পরিমাণ

ফিদইয়ার পরিমাণ স্থানীয় বাজার দর অনুযায়ী নির্ধারণ করা হয়। সাধারণত প্রতিটি রোজার জন্য একজন গরিব ব্যক্তিকে দুই বেলা খাদ্য দান করা হয়। খাদ্যের পরিমাণ স্থানীয় বাজার দর অনুযায়ী নির্ধারণ করা হয়।

৬. ফিদইয়া দেওয়ার সময়

ফিদইয়া দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। তবে রমজান মাসে বা রমজান মাসের পরে ফিদইয়া দেওয়া যেতে পারে। তবে যত দ্রুত সম্ভব ফিদইয়া দেওয়া উচিত।

৭. ফিদইয়া দেওয়ার গুরুত্ব

ফিদইয়া দেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি গরিব ও অসহায় মানুষের সাহায্য করার একটি মাধ্যম। ফিদইয়া দেওয়ার মাধ্যমে গরিব মানুষের মুখে হাসি ফোটানো যায় এবং তাদের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব করা যায়।

৮. অন্যান্য ইবাদত

রোজা রাখতে না পারলে অন্যান্য ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়। যেমন:

  • নামাজ: নিয়মিত নামাজ পড়া।
  • দোয়া: বেশি বেশি দোয়া করা।
  • জিকির: আল্লাহর জিকির করা।
  • সদকা: গরিব ও অসহায় মানুষকে সাহায্য করা।

৯. উপসংহার

আপনার দাদী অতি বৃদ্ধ হওয়ার কারণে রোজা রাখতে না পারলে, তার জন্য রোজা না রাখার অনুমতি রয়েছে। তার পক্ষ থেকে ফিদইয়া দেওয়া যেতে পারে। ফিদইয়া দেওয়ার মাধ্যমে গরিব ও অসহায় মানুষের সাহায্য করা যায় এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়। ফিদইয়া দেওয়ার জন্য স্থানীয় মসজিদ বা ইসলামী সংস্থার সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে। রোজা রাখতে না পারলে অন্যান্য ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়।

Share this

এই পোষ্টগুলো পড়তে পারেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *