রোজা রেখে নাভির নিচের লোম কাটা যাবে কি?

Share this

রমজান মাসে রোজা রাখা ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। রোজা রাখার সময় মুসলমানদের সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার এবং অন্যান্য নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। তবে রোজা রাখার সময় বিভিন্ন প্রশ্ন ও দ্বিধা তৈরি হয়, যেমন: রোজা রেখে নাভির নিচের লোম কাটা যাবে কি? এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য ইসলামিক দৃষ্টিকোণ, ফিকহের নিয়ম এবং বাস্তব জীবনের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করা প্রয়োজন।

ইসলামিক দৃষ্টিকোণ:

ইসলামে রোজা রাখার সময় শরীরের লোম কাটা বা চুল কাটার ব্যাপারে সরাসরি কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে রোজা রাখার সময় কোনো কাজ যদি রোজার নিয়ম বা শর্তের পরিপন্থী হয়, তাহলে তা এড়িয়ে চলা উচিত। নাভির নিচের লোম কাটা একটি ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার বিষয়, যা ইসলামে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নবী মুহাম্মদ (সা.) নাভির নিচের লোম কাটার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন এবং এটিকে ফিতরাত বা স্বভাবজাত কাজের মধ্যে গণ্য করেছেন।

ফিকহের নিয়ম:

ইসলামিক ফিকহ অনুযায়ী, রোজা রাখার সময় নাভির নিচের লোম কাটা জায়েজ। কারণ এটি রোজার নিয়ম বা শর্তের পরিপন্থী নয়। তবে কিছু বিষয় বিবেচনা করা উচিত:

১. রোজার নিয়ম: রোজা রাখার সময় পানাহার, যৌন সম্পর্ক এবং অন্যান্য নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। নাভির নিচের লোম কাটা এই নিষিদ্ধ কাজের মধ্যে পড়ে না।

২. শরীরের পরিচ্ছন্নতা: ইসলামে শরীরের পরিচ্ছন্নতার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নাভির নিচের লোম কাটা পরিচ্ছন্নতার অংশ, তাই এটি রোজা রাখার সময়ও করা যেতে পারে।

৩. সতর্কতা: রোজা রাখার সময় নাভির নিচের লোম কাটার সময় সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত, যাতে কোনোভাবে রোজা ভঙ্গ না হয়। যেমন, লোম কাটার সময় পানাহার বা অন্য কোনো নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকা।

নাভির নিচের লোম কাটার পদ্ধতি:

নাভির নিচের লোম কাটার জন্য নিম্নলিখিত পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত:

১. পরিচ্ছন্নতা: লোম কাটার আগে শরীর ও স্থানটি পরিষ্কার করুন। এটি ইসলামে পরিচ্ছন্নতার অংশ।

২. সতর্কতা: লোম কাটার সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন, যাতে কোনোভাবে রোজা ভঙ্গ না হয়।

৩. সময় নির্বাচন: রোজা রাখার সময় লোম কাটার জন্য উপযুক্ত সময় নির্বাচন করুন। যেমন, সেহরি বা ইফতারের পর।

৪. সহজ পদ্ধতি: লোম কাটার জন্য সহজ ও নিরাপদ পদ্ধতি ব্যবহার করুন। যেমন, কাঁচি বা ট্রিমার ব্যবহার করা।

আরও পড়ুনঃ সেহরি খাওয়ার পর স্বপ্নদোষ হলে কি রোজা হবে?

রোজা রাখার সময় লোম কাটার পরামর্শ:

যদি কেউ রোজা রাখার সময় নাভির নিচের লোম কাটতে চান, তাহলে নিম্নলিখিত পরামর্শগুলি অনুসরণ করা উচিত:

১. পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন: লোম কাটার আগে ও পরে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন। এটি ইসলামে গুরুত্বপূর্ণ।

২. সতর্কতা অবলম্বন করুন: লোম কাটার সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন, যাতে কোনোভাবে রোজা ভঙ্গ না হয়।

৩. সহজ পদ্ধতি ব্যবহার করুন: লোম কাটার জন্য সহজ ও নিরাপদ পদ্ধতি ব্যবহার করুন।

৪. আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন: আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন এবং তাঁর রহমতের আশা করুন। তিনি আপনার ইচ্ছা ও প্রচেষ্টাকে মূল্যায়ন করবেন।

উপসংহার:

রোজা রাখার সময় নাভির নিচের লোম কাটা জায়েজ। এটি রোজার নিয়ম বা শর্তের পরিপন্থী নয় এবং ইসলামে শরীরের পরিচ্ছন্নতার অংশ। তবে লোম কাটার সময় সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত, যাতে কোনোভাবে রোজা ভঙ্গ না হয়। মনে রাখবেন, আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়ালু, এবং তিনি আপনার ইচ্ছা ও প্রচেষ্টাকে মূল্যায়ন করবেন। তাই রোজা রাখার সময় নাভির নিচের লোম কাটার প্রয়োজন হলে সতর্কতা অবলম্বন করে তা করতে পারেন।

Share this

এই পোষ্টগুলো পড়তে পারেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *