রোজা রেখে সহবাস করা যায়?

Share this
রোজা রাখা ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। রমজান মাসে প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ ও সক্ষম মুসলমানের জন্য রোজা রাখা ফরজ। রোজা রাখার সময় সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার এবং অন্যান্য নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। তবে অনেক সময় বিভিন্ন প্রশ্ন ও দ্বিধা তৈরি হয়, যেমন: রোজা রেখে সহবাস করা যায় কি? এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য ইসলামিক দৃষ্টিকোণ, ফিকহের নিয়ম এবং বাস্তব জীবনের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করা প্রয়োজন।
ইসলামিক দৃষ্টিকোণ:
ইসলামে রোজা রাখার সময় সহবাস করা নিষিদ্ধ। সহবাস করা রোজা ভঙ্গের অন্যতম প্রধান কারণ। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেছেন, “রমজানের রাতে তোমাদের জন্য স্ত্রীদের সাথে সহবাস করা হালাল করা হয়েছে।” (সূরা বাকারা, আয়াত ১৮৭)
এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, রমজান মাসে রোজা রাখার সময় দিনের বেলা সহবাস করা নিষিদ্ধ, তবে রাতের বেলা এটি হালাল। রোজা রাখার সময় সহবাস করা রোজা ভঙ্গ করে এবং এর জন্য কাফফারা দেওয়া আবশ্যক।
ফিকহের নিয়ম:
ইসলামিক ফিকহ অনুযায়ী, রোজা রাখার সময় সহবাস করা নিষিদ্ধ। এটি রোজা ভঙ্গের অন্যতম প্রধান কারণ। সহবাস করা রোজা ভঙ্গ করে এবং এর জন্য কাফফারা দেওয়া আবশ্যক। কাফফারা হলো একটি গোলাম আজাদ করা, বা ৬০ দিন রোজা রাখা, বা ৬০ জন মিসকিনকে খাওয়ানো।
সহবাসের পর করণীয়:
যদি কেউ রোজা রাখার সময় সহবাস করে, তাহলে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করা উচিত:
১. তওবা করা: প্রথমেই আল্লাহর কাছে তওবা করা। তওবা হলো গুনাহ থেকে ফিরে আসা এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।
২. কাজা রোজা রাখা: সহবাস করার ফলে রোজা ভঙ্গ হয়, তাই পরে কাজা রোজা রাখা আবশ্যক। কাজা রোজা হলো সেই রোজাগুলো পরবর্তীতে রাখা।
৩. কাফফারা দেওয়া: সহবাস করার ফলে রোজা ভঙ্গ হয়, তাই এর জন্য কাফফারা দেওয়া আবশ্যক। কাফফারা হলো একটি গোলাম আজাদ করা, বা ৬০ দিন রোজা রাখা, বা ৬০ জন মিসকিনকে খাওয়ানো।
আরও পড়ুনঃ রোজা রেখে রক্ত দেওয়া যাবে কি?
সহবাসের পর সতর্কতা:
সহবাস করার পর সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করা যেতে পারে:
১. সচেতনতা তৈরি করুন: সহবাস করা রোজা ভঙ্গের অন্যতম প্রধান কারণ। এই বিষয়ে সচেতন হোন এবং এগুলি থেকে সতর্ক থাকুন।
২. সময় ব্যবস্থাপনা: রোজা রাখার সময় সহবাস করা নিষিদ্ধ। রাতের বেলা সহবাস করা হালাল, তাই সময় ব্যবস্থাপনা করুন।
৩. আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন: আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন এবং তাঁর রহমতের আশা করুন। তিনি আপনার ইচ্ছা ও প্রচেষ্টাকে মূল্যায়ন করবেন।
উপসংহার:
রোজা রাখার সময় সহবাস করা নিষিদ্ধ। এটি রোজা ভঙ্গের অন্যতম প্রধান কারণ এবং এর জন্য কাফফারা দেওয়া আবশ্যক। মনে রাখবেন, রোজা রাখা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, এবং এটি আল্লাহর নৈকট্য লাভের একটি মাধ্যম। তাই রোজা রাখার সময় সহবাস করা থেকে বিরত থাকুন এবং আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন।